তিনি জন্মেছিলেন ১৬১ বছর আগে। কিন্তু তিনি এমনি শাশ্বত অনুভূতির রচনা করে গেছেন, যা একশ পঞ্চাশ বছর পরও প্রাসঙ্গিক। ঈদের আমেজটা যেন কাটেনি এখনও।
বাড়িতে থাকা অনেকেই ফিরতে শুরু করেছেন কর্মস্থলে। যারা ফিরছেন, তারা রেখে আসছেন ঈদের দিনের পবিত্র প্রার্থনার শুরু, পরিবার, স্বজন, বন্ধুদের স্মৃতি।
একালের এমন দৃশ্য কোনোভাবেই তো দেখার কথা না রবি ঠাকুরের। তিনি জন্মেছিলেন ১৬১ বছর আগে। কিন্তু তিনি এমনি শাশ্বত অনুভূতির রচনা করে গেছেন, যা একশ পঞ্চাশ বছর পরও প্রাসঙ্গিক।
তাই হোক ঈদ, পূজা, বড়দিন বা বুদ্ধপূর্ণিমা; রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর চিরন্তন তার লেখায়-
‘কামনা করি একান্তে
হউক বরষিত নিখিল বিশ্বে সুখ শান্তি
পাপতাপ হিংসা শোক পাসরে সকল লোক,
সকল প্রাণী পায় কূল
সেইসব তব তাপিতশরণ অভয়চরণপ্রান্তে’
দেশপ্রেমের গানে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া ভাবা যায় কি না, সেটা একটা উদাহরণ দিলেই বোঝা যাবে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসে যে গানগুলো বেশি শোনা যায়, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘ও আমার দেশের মাটি’, ‘বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল পূণ্য হউক’, ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি’, ‘যে তোমায় ছারে ছারুক’সহ আরও অসংখ্য গানের রচয়িতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
‘সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।
সার্থক জনম, মা গো তোমায় ভালোবেসে।’
কবিতাটিও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দেশপ্রেমেরই প্রকাশ। আর দেশপ্রেমের ব্যাপারে রবীন্দ্রনাথ ছাড়া যে চলবেই না, তা প্রমাণ হয় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে।
‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গানটির চেয়ে এত সুন্দর করে বাংলাকে আর কেই বা ফুটিয়ে তুলেছে।
তারুণ্যে বা প্রেরণায় এখনও রবীন্দ্রনাথ। কীভাবে? এখনও তরুণসহ য কারও উদ্দীপ্ত হওয়ার বাণী ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে।’
কিছুদিন আগে বাংলা নতুন সনের বরণ অনুষ্ঠানে ছায়ানট ব্যবহার করেছে কবিগুরুর বাণী। ‘নব আনন্দে জাগো আজি নব রবি কিরণে/শুভ্র সুন্দর প্রীতি-উজ্জ্বল নির্মল জীবনে’ গানের মাধ্যমে শুভ্র, সুন্দর, নির্মল জীবনের প্রত্যাশা করা হয়ে আসছে, চলছে এখনও।
আর ভলোবাসায় জেনে, না জেনে বিশ্বকবিকে আক্রে আছে বাঙালি। তার লেখা কবিতা-গানেই বঙালির প্রেম-বিরহ, পরিনতি।
কবিগুরু নিজেও যেন সব যুগের প্রেমের প্রতিনিধি–
‘জানি আমি তোমায় পাবো নিরন্তন
লোক লোকান্তরে যুগ যুগান্তর
তুমি আর আমি, মাঝে কেহ নাই
কোনো বাঁধা নাই ভুবনে।
নয়ন তোমারে পায় না দেখিতে
রয়েছ নয়নে নয়নে।’
তাই বলা যায় বাঙালির সকল অনুভূতির আশ্রয় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিরল এ প্রতিভা জন্মেছিলেন ১৮৬১ সালে ২৫- এ বৈশাখে। রোববার তার ১৬১ তম জন্মদিন।
তিনি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ। তার সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।